Copyright কী, কিভাবে কাজ করে, কপিরাইট এলে কী হয়, কিভাবে রিমুভ করা যায় এবং কপিরাইট থেকে বাঁচার উপায়
কপিরাইট কী? কিভাবে কাজ করে ও কপিরাইট সমস্যা সমাধানের সম্পূর্ণ গাইড
আজকের ডিজিটাল দুনিয়ায় Copyright (কপিরাইট) এমন একটি আইন যা আপনার তৈরি করা ভিডিও, ছবি, গান বা যেকোনো কনটেন্টকে সুরক্ষা দেয়। বিশেষ করে ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কপিরাইট নিয়ম না মানলে ভিডিও ব্লক হয়ে যেতে পারে বা চ্যানেল বন্ধও হয়ে যেতে পারে। তাই কপিরাইট সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা খুবই জরুরি।
কপিরাইট (Copyright) কী?
কপিরাইট হলো একটি আইনগত অধিকার যা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা কনটেন্টের উপর তাদের মালিকানা স্বীকৃতি দেয়।
- যেমন: কোনো গান, সিনেমা, ছবি, লেখা, সফটওয়্যার বা ভিডিও।
- যিনি কনটেন্ট বানিয়েছেন, তিনি বা তার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কেউ তা ব্যবহার করতে পারবেন না।
👉 সহজভাবে বললে: কপিরাইট মানে হলো আপনার তৈরি কাজ অন্য কেউ আপনার অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে পারবে না।
কপিরাইট কিভাবে কাজ করে?
ইউটিউব বা ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে Content ID System থাকে।
- এই সিস্টেম প্রতিটি ভিডিও স্ক্যান করে দেখে তাতে অন্য কারো গান, ভিডিও ক্লিপ বা ছবি ব্যবহার হয়েছে কিনা।
- যদি মিলে যায়, তাহলে কপিরাইট মালিকের কাছে একটি নোটিফিকেশন যায় এবং তিনি চাইলে—
- ভিডিও ব্লক করতে পারেন।
- ভিডিও মনিটাইজেশন (Ads Revenue) নিজের নামে নিতে পারেন।
- অথবা ভিডিওতে বিজ্ঞাপন চালিয়ে আয় করতে পারেন।
ইউটিউবে কপিরাইট আসলে কী হয়?
কোনো ভিডিওতে কপিরাইট আসলে কয়েকভাবে সমস্যা হতে পারে:
- Copyright Claim → ভিডিও ব্লক হবে না, তবে আপনার ভিডিও থেকে আয় যাবে মালিকের কাছে।
- Copyright Strike → এটি গুরুতর বিষয়। যদি ৩টি স্ট্রাইক পান, তবে আপনার পুরো চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাবে।
- Muted Audio / Blocked Video → আপনার ভিডিওর সাউন্ড বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বা পুরো ভিডিও ব্লক হয়ে যেতে পারে।
কপিরাইট আসলে কিভাবে রিমুভ করবেন?
১. নিজের কনটেন্ট ব্যবহার করুন
সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হলো নিজের তৈরি ভিডিও, ছবি, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ব্যবহার করা।
২. Copyright-Free / Royalty-Free কনটেন্ট ব্যবহার করুন
- YouTube Audio Library থেকে ফ্রি মিউজিক ও সাউন্ড ব্যবহার করতে পারেন।
- Pixabay, Pexels, Unsplash থেকে ফ্রি ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ভিডিও এডিট করে কপিরাইট এড়ানো
যদি অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতেই হয়, তবে—
- মিউজিক রিমিক্স করুন (গতি বাড়ানো/কমানো)।
- ভিডিও ক্লিপে ফিল্টার বা ক্রপ ব্যবহার করুন।
- তবে এগুলো ১০০% গ্যারান্টি নয়।
৪. ফেয়ার ইউজ (Fair Use)
কিছু ক্ষেত্রে কপিরাইট কনটেন্ট ব্যবহার করা যায়। যেমন:
- রিভিউ (Review)
- শিক্ষা উদ্দেশ্যে (Educational Purpose)
- নিউজ রিপোর্টিং (News Reporting)
কিন্তু শর্ত হলো → ভিডিওর আসল অংশ কপি না করে ব্যাখ্যা বা নতুন ভ্যালু যোগ করতে হবে।
৫. কপিরাইট ডিসপিউট (Dispute) করা
যদি মনে করেন আপনার ভিডিওতে ভুলভাবে কপিরাইট দেওয়া হয়েছে, তাহলে Dispute/Appeal করতে পারবেন।
- ইউটিউবের ভিডিও ম্যানেজারে গিয়ে কপিরাইট নোটিফিকেশনের পাশে “Dispute” বাটনে ক্লিক করুন।
- প্রয়োজনীয় তথ্য দিন।
- যদি সঠিক প্রমাণ দেন, কপিরাইট রিমুভ হয়ে যাবে।
কপিরাইট থেকে বাঁচার টিপস
✔ সবসময় নিজের কনটেন্ট তৈরি করুন।
✔ Free/No Copyright মিউজিক ও ছবি ব্যবহার করুন।
✔ ভিডিওতে ছোট ক্লিপ ব্যবহার করলে Credit দিন।
✔ ইউটিউবের নীতিমালা মেনে চলুন।
✔ কোনো ট্রেন্ডিং গান বা মুভির সম্পূর্ণ অংশ ব্যবহার করবেন না।
সাধারণ কিছু প্রশ্ন (FAQ)
❓ আমার ভিডিওতে কপিরাইট এলে কি চ্যানেল সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যাবে?
👉 না, শুধু স্ট্রাইক এলে ঝুঁকি আছে। ৩টি স্ট্রাইক হলে চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাবে।
❓ আমি কি যেকোনো গান ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবো?
👉 না, যদি সেই গান কপিরাইট সুরক্ষিত হয়। তবে ইউটিউব অডিও লাইব্রেরি বা Royalty Free গান ব্যবহার করতে পারবেন।
❓ কপিরাইট Claim আর Strike কি এক জিনিস?
👉 না। Claim হলে আয় চলে যাবে মালিকের কাছে। Strike হলে আপনার চ্যানেল ঝুঁকিতে পড়বে।
শেষ কথা
কপিরাইট সম্পর্কে না জেনে ভিডিও আপলোড করলে অনেক সময় কষ্ট করে বানানো ভিডিও মুছে যায় বা মনিটাইজেশন বন্ধ হয়ে যায়। তাই সবসময় নিজের কনটেন্ট ব্যবহার করুন অথবা Copyright-Free কনটেন্ট ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন—
👉 নিজের তৈরি কনটেন্টই আপনাকে সাফল্য এনে দেবে এবং দীর্ঘমেয়াদে ইউটিউব ক্যারিয়ারকে নিরাপদ রাখবে।

